
সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যায় ৮ আসামির মৃত্যুদণ্ড


সিলেট প্রতিনিধি
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় স্কুলছাত্র সুমেল আহমদ (১৮) হত্যা মামলায় আটজনের মৃত্যুদণ্ড ও সাতজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া ১৭ আসামির দুই বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক (প্রথম আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক) সৈয়দা আমিনা ফারহিন এ রায় ঘোষণা করেন। সিলেট জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বেঞ্চ সহকারী (পেশকার) আল আমিন রানা এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, মামলায় ৩৪ জন আসামির আটজনের মৃত্যুদণ্ড ও সাতজনের যাবজ্জীবন এবং ১৭ জনের দুই বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বিচারক। এর মধ্যে ৩১ জন কারাগারে রয়েছেন। কেবল দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত মামুনুর রশিদ পলাতক রয়েছেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, উপজেলার ইসলামপুর গ্রামে সাইফুল আলম (৪৪), তার সহোদর নজরুল আলম (৪১), ছদরুল ওরফে সদর আলম (৪৩), একই উপজেলার চৈতন্যনগর গ্রামের সিরাজ উদ্দিন (৪৭), জামাল মিয়া (৪৯), শাহিন উদ্দিন (৪২), গাঙ্ঘুটিয়া গ্রামের আব্দুল জলিল (৪৯) এবং পশ্চিম ঘরগাড়িকান্দি গ্রামের আনোয়ার হোসেন। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, উপজেলার চৈতন্যনগর গ্রামের ইলিয়াছ আলী (৫৬), তার সহোদর আব্দুন নুর (৫১) ও জয়নাল আবেদীন (৪১), একই গ্রামের আশিক উদ্দিন (৫০), আছকির আলী (৪৯), ওই গ্রামের মিয়া ওরফে ফরিদ (৪৬), একই গ্রামের আকবর মিয়া (৪৪)। পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ের আরও দুই বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। দুই বছরের দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, লুৎফুর, ময়ূর, মানুনুর রশিদ (পলাতক), কাওছার, দিলাফর, পারভেজ, ওয়াহিদ, দিলোয়ার, আজাদ, মুক্তার, রকিব, আঙ্গুর, জাবেদ, শফিক, মখলিছ, ফিরোজ ও ফখর উদ্দিন। মামলার বরাত দিয়ে আদালত সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ১ মে বিশ্বনাথ উপজেলার চাউলধনী হাওরে পূর্ব বিরোধের জেরে শাহজালাল হাইস্কুলের ১০ম শ্রেণির ছাত্র সুমেল নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওইদিন বিশ্বনাথের চৈতননগর গ্রামের নজির উদ্দিনের ক্ষেতের জমি থেকে জোর করে রাস্তায় মাটি তুলতে চান যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাইফুল আলম। এ সময় তাকে বাধা দেন নজির উদ্দিন, চাচাতো ভাই মানিক মিয়া ও ভাতিজা দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া স্কুলছাত্র সুমেল। এতে বাগ-বিতণ্ডার এক পর্যায়ে সাইফুল আলমের বন্দুকের গুলিতে ওইদিন সুমেল নিহত হয় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন সুমেলের বাবা ও চাচাসহ চারজন। এ ঘটনায় নিহত সুমেলের চাচা বাদী হয়ে বিশ্বনাথ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে দায়রা ৬০৬/২০২২ মূলে বিচারের জন্য স্থানান্তর করা হয়। ১৩ জুলাই মামলাটির যুক্তিতর্ক শেষ হয় এবং আদালত গতকাল বুধবার এ মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। একইসঙ্গে ওইদিন আদালত ৩০ আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। প্রায় চার বছর পর এ মামলার রায় ঘোষণা করা হলো।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ